নিজের শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝড়িয়ে, স্বাস্থ্যের সামগ্রিক উন্নয়ন করতে চান? সুঠাম-সুগঠিত ঝরঝরে একটি দেহ পেতে চান? তাহলে আপনার একমাত্র সমাধান হতে পারে মেটাবোলিজম ঠিক করা। শরীরে রাসায়নিক ও শারীরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াগুলোকে মেটাবোলিজম বলে। প্রশ্ন উঠতে পারে মেটাবোলিজমের সঙ্গে সুঠাম সুগঠিত দেহের কী সম্পর্ক? শরীরে যদি বাড়তি মেদ বা চর্বি জমার কোনো সুযোগ না থাকে, এমনভাবে যদি নিজের শারীরিক অভ্যাসগুলো গড়ে নেওয়া যায় তাহলে দ্রুতই বাড়তি ওজন কমানো সম্ভব। চলুন দেখে নেয়া যাক কীভাবে সেটি সম্ভব।
পানি পান: পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে শরীর আর্দ্র থাকে, এতে আপনার পেট ভরা এমন ভাবও তৈরি হবে। ক্ষুধাও কম লাগবে, এ কারণে আপনি কম খাবেন, ধীরে ধীরে ওজনও কমবে তাতে। দিনে অন্তত ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করুন।
ফাস্টফুডকে ‘না’: প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, সোডা, এই খাবারগুলোকে একেবারে না বলুন। এগুলোর মধ্যে উচ্চ পরিমাণ ক্যালরি থাকে, এতে ওজন বাড়ে।
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার: প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় রাখুন। এতে পেশি স্বাস্থ্যকর হবে। প্রোটিন খাবার বাদ দিলে শরীরে এর বাজে প্রভাব পড়বে। দুধ, ডিম, মুরগির মাংস, ডাল খাদ্যতালিকায় রাখুন। তবে লাল মাংস (গরু, খাসি) এড়িয়ে চলুন।
চিনি ও শর্করাকে ‘না’: চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকুন। পাশাপাশি শর্করাজাতীয় খাবার কম খান। ভাত, রুটি অবশ্যই খাবেন তবে পরিমাণে কম খাবেন। এসব খাবার কম খেলে ওজন দ্রুত কমবে।
খাবার বাদ দেবেন না: না খেয়ে কিন্তু ওজন কমানো যায় না। তাই কোনো বেলার খাবারকে বাদ দেওয়া যাবে না। দিনে অন্তত ছয়বার খান। তিনবেলা বড় খাবার ও তিনবেলা ছোট খাবার, এভাবে খাবারকে ভাগ করুন। একেবারে খুব বেশি না খেয়ে অল্প পরিমাণ খা
খাবারের পরিমাণ কমান: ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে খাবারের পরিমাণ কমাতে হবে। আগে যেখানে হয়তো তিনটি রুটি খেতেন, সেখানে একটি রুটি খান বা যেখানে এক থালা ভাত খেতেন, সেখানে এক কাপ ভাত খান। এর বদলে পেট ভরুন সবজি আর ফল দিয়ে।
১০. আয়নার সামনে বসে খাবেন: শুনতে হয়তো অদ্ভুত লাগতে পারে, তবে গবেষণায় বলা হয়, যেসব লোক আয়নার সামনে বসে খায়, তাদের ওজন দ্রুত কমে। কীভাবে? তারা নিজেকে দেখতে থাকে আর ভাবতে থাকে, ওজন কমানো দরকার। এই ভাবনা আপনার ক্ষেত্রেও কাজে দেয় কি না, একবার পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
ওজন কমাতে চাইলে খাবার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এই ব্যায়ামগুলোও করার চেষ্টা করুণ।
হাঁটুন: ওজন কমাতে হাঁটার কোনো বিকল্প নেই। আর হাঁটা তো কেবল ওজনই কমাবে না, কমাবে হৃদরোগের ঝুঁকিও। বিষণ্ণতা বা মন খারাপ ভাবও কমে যাবে অনেক।
সাঁতার: সাঁতার পুরো শরীরের জন্যই চমত্কার একটি ব্যায়াম। নিয়মিত সাঁতার কাটলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আরো কর্মক্ষম হয়ে ওঠে। এবং এটি যেমন শরীরের প্রতিটি জোড়ার জন্য ভালো, তেমনি মানসিক প্রশান্তিও দেয়। সাঁতরালে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫০ থেকে ৫৫০ পর্যন্ত ক্যালরি পোড়ে।
টেনিস: গতি, যথার্থতা, শক্তি এবং সমন্বয় – এ সবকিছুই টেনিস খেলার জন্য জরুরি। টেনিস খেলা একই সঙ্গে বায়ুজীবী ও অবায়ুজীবী সক্ষমতা বাড়ায় এবং এটি বহুমুখী ফলদায়ক ব্যায়াম। টেনিস মানসিক সতর্কতাও বাড়ায়। টেনিস খেলে প্রতি ঘণ্টায় আপনি ব্যয় করতে পারবেন ৩০০ থেকে ৪০০ ক্যালরি।
বেসবল: বেসবল আমাদের দেশে খুব একটা প্রচলিত না হলেও শরীরচর্চায় এ খেলাও অত্যন্ত চমত্কার কাজ দেয়। এটা অনেকটা ক্রিকেটের মতোই। হাত ঘুরিয়ে বল করতে হয় এবং সজোরে বল মারতে হয় ও দৌড়াতে হয় বলে এটি ব্যায়াম হিসেবে ভালো। বেসবল খেলায় প্রতি ঘণ্টায় পোড়ে ৩৭৫ থেকে ৫৭৫ ক্যালরি।
ভলিবল: খেলতে খেলতে ওজন কমাতে চাইলে ভলিবলকে বেছে নিতে পারেন। ভলিবল একটি মজার এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ ওজন কমাবার উপায়। ভলিবল খেলা ক্যালরি পোড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হাত ও চোখের সমন্বয় উন্নত করে। ভলিবল খেলে প্রতি ঘণ্টায় আপনি পোড়াতে পারবেন ১৮৫ থেকে ২৮৫ ক্যালরি।
সাইকেল চালানো: সাইকেল চালানো পায়ের পেশির জন্য খুবই উপকারী। নিয়মিত সাইকেল চালালে হৃদপিণ্ড যেমন ভালো থাকে, তেমনি ওজন বাড়ার প্রবণতাও কমে যায়। সাইকেল চালালে প্রতি ঘণ্টায় ৫০০ থেকে ৭৫০ ক্যালরি পর্যন্ত ব্যয় হয়।